সে অনেক দিন আগের কথা। এক গ্রামে ছিলো একজন মাখন বিক্রেতা। তিনি তার গ্রামেরই এক রুটিওয়ালার কাছে মাখন বিক্রি করতেন। এ কারণে তিনি প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে মাখন নিয়ে রুটিওয়ালার কাছে যেতেন। এভাবেই চলছিলো…
কিন্তু হঠাৎ একদিন রুটিওয়ালার মনে হলো কৃষক তাঁকে পরিমানে কম দিচ্ছে ও ঠকাচ্ছে! রুটিওয়ালা ছিলেন অত্যন্ত বদমেজাজী। সে কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে কৃষককেও কিছু না বলে সোজা বিচারকের কাছে নালিশ করে দিল! কী সাংঘাতিক লোকরে বাবা!






এদিকে বিচারক সেই মাখন ওয়ালাকে ডেকে পাঠালেন। বিচারক তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি মাখন বিক্রির পূর্বে তা পরিমাপ করেন?” উত্তরে কৃষক বললেন, “সাহেব, আমি গরীব মানুষ। আমার কাছে এত টাকা পয়সা নাই। তবে একটা কথা বলতে পারি। আজ থেকে অনেক দিন আগে ওই রুটিওয়ালার কাছে আমি রুটি নিতাম। তখন সে আমাকে যতটুকু রুটি দিত তা স্কেল দিয়ে মেপে রাখতাম। কাজেই প্রতিদিন সকালে তাঁকে মাখন দেওয়ার সময় আমি ঐ স্কেল দিয়ে মেপে নেই এবং যতটুকু রুটি আমি পেয়েছি ঠিক ততটুকু মাখন হিসেব করে আমি তাঁকে দেই। কাজেই এখানে যদি কেউ দোষী হয় সে আমি নই বরং ঐ রুটিওয়ালায় দোষী।”
মাখনওয়ালার বক্তব্য শুনে বিচারক হতভম্ব হয়ে গেলেন! তার আর বুঝতে বাকি রইলনা যে, এখানে কে অপরাধী? আসলে অপরাধী মাখনওয়ালা নয় বরং অভিযোগকারী রুটিওয়ালাই এখানে অপরাধী!






প্রিয় পাঠক, এখন ভাবুন তো, এ গল্পে শিক্ষণীয় কী আছে? হ্যাঁ, যা শেখার আছে, তা হলো- মাখনওয়ালাকে রুটিওয়ালা যেভাবে ঠকিয়েছিলো, নিজের অজান্তেই রুটিওয়ালাকেও মাখনওয়ালা ওইভাবে ঠকিয়েছে!
অর্থাৎ আপনি জীবনে যে কাজ করবেন সেটি ভালো হোক কিংবা মন্দ, সেটিই একদিন আপনার জীবনে অন্যরূপ নিয়ে অবশ্যই ফিরে আসবে। যেমনটি রুটিওয়ালার ক্ষেত্রে হয়েছিলো।






আপনি যদি ভালো কিছু করেন তাহলে ভবিষ্যতে অবশ্যই আপনি তা কোন না কোনোভাবে ফেরত পাবেন। আর যদি খারাপ কিছু করেন তাহলে একদিন তা আপনার জন্য কাল হয়ে দাড়াবে!






কেননা প্রকৃতি কাউকেই ক্ষমা করেনা।
ভাষান্তর : ইউসুফ হাসান পারভেজ
জীবন বদলে দেওয়ার গল্প-৫ আগামীকাল আসছে…
ConversionConversion EmoticonEmoticon