জিএমপির টঙ্গী থানায় গিয়ে অপহরণের মামরা দায়ের করার পর পুলিশ তদন্ত করে তার অপহরণের রহস্য উদ্ধার করার পর তিনি পুলিশের কাছে এবং ফেসবুক লাইভে স্বীকার করেছেন, তিনি নিজেই পঞ্চগড়ে গিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে জিএমপি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানায় জিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) তাহেরুল হক চৌহান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মুফতি মুহিব্বুল্লাহ নিজেই টঙ্গী থানায় এসে নিজের অপহরণের কথা জানান। তখন তিনি বলেন, আমি শারিরীকভাবে একটু অসুস্থ, আমাকে একটু সময় দিন। পুলিশ তাকে সময় দেয়। পরে বিকালে তিনি থানায় এসে নিজে বাদী হয়ে একটি অপহরণের মামলা দায়ের করেন।
এজাহারে তিনি দাবি করেছিলেন, গত ২২ অক্টোবর সকাল ৭টার দিকে টঙ্গীর শিলমুন এক্সিস লিংক সিএনজি ফিলিং অ্যান্ড কনভার্সন সেন্টারের সামনে থেকে তাকে অপহরণ করে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নেওয়া হয়। পরে তিনি নিজেই টঙ্গী থানায় উপস্থিত হয়ে, ‘পঞ্চগড়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হওয়ার কথাও নিজেই জানান। এ ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরো জানান, টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মরকুন টিএন্ডটি বাজার জামে মসজিদের খতিব মোহাম্মদ মোহেববুল্লাহ মিয়াজি অপহৃত হয়েছেন সংক্রান্তে ২৪ অক্টোবর মামলা রেকর্ড করা হয়।
এজাহারের বক্তব্য অনুযায়ী জানা যায়, গত ২২ অক্টোবর সকাল ৭টায় টিএন্ডটি বাজার জামে মসজিদের খতিব মোহাম্মদ মোহেববুল্লাহ মিয়াজি (৬০) মর্নিং ওয়াকে বের হলে বাসার অদূরে টঙ্গী পূর্ব থানাধীন শিলমুন সাকিনস্থ এক্সেস লিংক সিএনজি ফিলিং এন্ড কনভারশন সেন্টারের সামনে টঙ্গী টু কালীগঞ্জগামী আঞ্চলিক সড়কের উপর একটি অ্যাম্বুলেন্স তাহার পথরোধ করে দাঁড়ায় এবং তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ করতঃ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন ব্যক্তি জোরপূর্বক অ্যাম্বুলেন্সে উঠায় এবং সাথে সাথে কালো কাপড়ে চোখ বেঁধে নির্যাতন করতে থাকে এবং গাড়ি বিরতিহীন ভাবে চলতে থাকে। এভাবে থেমে থেমে তারা তাকে শারীরিক নির্যাতন করে। টানা প্রায় একদিন একরাত গাড়ি চলার পর গাড়ি থামিয়ে তাকে প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে কাচের বোতল দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারাত্মকভাবে আঘাত করে ও তার দাড়ি কেটে দেয়। একপর্যায়ে তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে অজ্ঞাত স্থানে অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন বিবাদী তাকে বিবস্ত্র করে ফেলে এবং দিনের আলো হতে থাকলে মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে শিকল দিয়ে তার বাম পা রাস্তার পাশের একটি গাছের সাথে বেধে রেখে চলে যায় এবং বিবাদীরা তার সঙ্গে থাকা ২টি সিম, যার মোবাইল নম্বর-০১৭২৫৯৬৫৭৫৮, ০১৬৭৬১০২৭৫৬ সহ একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাস্তায় চলাচলরত কিছু লোক এসে বাদীকে উদ্ধার করে এবং পরবর্তীতে জানতে পারেন যে, এটি পঞ্চগড় জেলায় অবস্থিত। স্থানীয় জনতা জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ এ ফোন করলে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ তাহাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশের সহায়তায় তিনি পঞ্চগড় থেকে বর্তমান ঠিকানার বাসায় আসেন।

ConversionConversion EmoticonEmoticon